বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছে থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসা এবং দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জানুয়ারির মধ্যেই খালের দায়িত্ব পাচ্ছে ২ সিটি করপোরেশন: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ঢাকা মহানগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য দুই সিটি মেয়রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরকে আধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন করতে হলে নগরীর বেদখল এবং হারিয়ে যাওয়া খালগুলোকে উদ্ধার, সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ধীরে ধীরে দখল হওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধার করা হবে।’
‘জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নাগরিকের সকল সুযোগ-সুবিধা দেশের জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ,’ বলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার অদক্ষতায় বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ পায়নি বাংলাদেশ: মন্ত্রী
দুই সিটি মেয়রকে ড্রেনেজ ব্যবস্থপনা কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই সিটি করপোরেশন ভালো করতে পারবে বলেই এ কাজ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হলো।’
তাজুল ইসলাম বলেন, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত। তাই জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা রয়েছে।
নাগরিক সুযোগ-সুবিধা অনুধাবন করে তাদের দুঃখ কষ্ট নিরসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দুই মেয়রকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
খাল দখল করে রাস্তা না বানিয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করার সুযোগ থাকলেও তা করা হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নগরীর সকল খাল সংস্কার করে একটির সাথে একটি সংযোগ দিয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করা, দুই পাশে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন নির্মাণসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে।
খালের বর্জ্যের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিও অপসারণ করা হচ্ছে: মেয়র তাপস
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব হাতে তুলে নিয়েছেন এবং নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
‘দেশ দ্রুত এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্ববাসীর কাছে ইতোমধ্যে চমক সৃষ্টি হয়েছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করায় আজ ইতিহাস রচিত হলো। মো. তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বলেই আজ এ ইতিহাস রচনা হলো।’
সিটি করপোরেশনের যথাযথ পরিষেবা বঞ্চিত ডেমরার বাসিন্দারা
ঢাকাকে ভেনিস নগরীর আদলে গড়ে তোলোর অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, ‘যে কোনো সমস্যা নিরসন এবং ঐতিহাসিক কিছু উপহার দেয়ার জন্য প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।’
উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘রাজধানীর সব খাল পুনরুদ্ধার করে হারানো রূপ ফিরিয়ে আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং জনগণকে সাথে নিয়ে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে খাল উদ্ধার করা হবে।’
নগরবাসীকে নিয়ে সবার ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার মেয়র আতিকের
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, ‘ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের জন্য অনেকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বের কারণে আজ এটি সম্ভব হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।